বিংশতিতম বুদ্ধের (মহামতি বুদ্ধের পর প্রধানকেও বুদ্ধ বলা হত সে আমলে) পরে আসেন আরেকজন। নাম তাঁর বোধিধর্মা।
ইতিহাসের পাতায় অার বৌদ্ধ দর্শনে একটা ভুলে যাওয়া নাম। আশ্চর্যের বিষয় অনেক বৌদ্ধ ই তাকে চেনেন না। ইনি দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা মহাযান বৌদ্ধ সাধু বোধিধর্মা।
সাওলিন প্রদেশ, চীন। সেখান কার মানুষদের একজন,শিশুদের খেলার সাথী হয়ে যান বোধিধর্মা। কিন্তু সেখানে এক অত্যাচারী রাজার অত্যাচারে রক্তাক্ত হচ্ছিল সেখানকার প্রজারা। বোধিধর্মা সেখানকার লোকেদের দুঃখে দুঃখী হন। তিনি তাদের আত্মরক্ষার করার জন্য মার্শাল আর্টের শিক্ষা দেন। অনেকের মতে ইনি ছিলেন পল্লব রাজকুমার আর কাঞ্জিপুরম তাঁর জন্মস্থান।
ইনি জন্মে ছিলেন ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দতে। দক্ষিণ ভারতের মালায়লম রাজা বল্লভ মহারাজের তৃতীয় সন্তান। ইনি ছিলেন মার্শাল আর্টের সৃষ্টি কর্তা। আমরা অনেকেই জানি কুংফু / ক্যারাটের দেশ হল চিন। সেখানেই সেখানো হয় কুংফু / ক্যারাটে। কিন্তু এটা আমরা অনেকেই জানিনা এই কুংফু / ক্যারাটে হল বহু প্রাচীন ভারতীয় প্রয়োগ বিদ্যা।
বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দির সাওলিন টেম্পল এ আজও বোধিধর্মন কে বুদ্ধ দেবের অবতার হিসাবে আর ঈশ্বর রূপে নিয়মিত পুজা করা হয়। অথচ ভারতে আমরা অনেকেই তার নাম জানিনা। তার অবশ্য একটি কারণ আছে। বোধিধর্মন বহুমাস পরিভ্রমণ করে চিন দেশে গেলেও আর ফিরতে পারেন নি। ওখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কারো কারো মতে তাকে হত্যা করা হয়।
বোধিধর্মন রাজ মাতার নির্দেশে চিন যাত্রা করেন, আর সেখানে শেখান এই মহা বিদ্যা। তিনি রাজপুত্র হয়েও সন্ন্যাসির মত খুব সাধারণ জীবন যাত্রা নির্বাহ করতেন। বোধিধর্মন একাধারে যোদ্ধা আর চিকিৎসক। তিনি সম্মোহন বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। বহু দুরারোগ্য ব্যাধি নিরাময় করার ওষুধ বানিয়ে ছিলেন। শেষ জীবন চিন দেশে থাকার জন্য সেসব চিন দেশের সম্পত্তি হয়ে যায়। দক্ষিণ ভারতে বোধিধর্মন সম্পর্কে বহু প্রবাদ আজও প্রচলিত।
বর্তমানে বোধিধর্মন কে নিয়ে অনেক রিসার্চ হচ্ছে, তাঁর জীবনী নিয়ে মুভি বানানো হচ্ছে। অনেকে সেই জন্যে চিনে যাচ্ছেন।