■■ দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে পরিগণিত না হলেও তুষারলিঙ্গ অমরনাথের মহিমা একেবারেই স্বতন্ত্র।
★জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত। এটি একটি শৈব তীর্থ। এই গুহাটি সমতল থেকে ৩,৮৮৮ মিটার (১২,৭৫৬ ফুট) উঁচুতে অবস্থিত। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ১৪১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই তীর্থে যেতে পহেলগাও শহর অতিক্রম করতে হয়।
★এই তীর্থভূমি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্যতম পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। গুহাটি পাহাড় ঘেরা আর এই পাহাড় গুলো সাদা তুষারে আবৃত থাকে বছরের অনেক মাস ধরে। এমনকি এই গুহার প্রবেশপথও বরফ ঢাকা থাকে।
★গ্রীষ্মকালে খুব স্বল্প সময়ের জন্য এই দ্বার প্রবেশের উপযোগী হয়। তখন লক্ষ লক্ষ তীর্থ যাত্রী অমরনাথের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। অমরনাথের গুহাতে চুইয়ে পড়া জল জমে শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করে। জুন-জুলাই মাসে শ্রাবণী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। শেষ হয় জুলাই-আগস্ট মাসে গুরু পূর্ণিমার সময় ছড়ি মিছিলে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই অমরনাথ যাত্রায় যোগদান করেন।
★গুহার ভিতরে ৪০ মিটার (১৩০ ফুট) ভিতরে গুহার ছাদ থেকে জল ফোটায় ফোটায় চুইয়ে পড়ে। এই চুইয়ে পড়া জলের ধারা খাড়া ভাবে গুহার মেঝে পড়ার সময় জমে গিয়ে শিব লিঙ্গের আকার ধারণ করে। কখনো কখনো ৮ ফুট উঁচুও হয় এই শিব লিঙ্গ। তবে গত কয়েকবছর ধরেই সময়ের আগেই বরফলিঙ্গ গলে যাচ্ছে যা হয়তো উষ্ণায়নের ফল।
★জুন-জুলাই মাসে শ্রাবণী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। শেষ হয় জুলাই-আগস্ট মাসে গুরু পূর্ণিমার সময় ছড়ি মিছিলে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই অমরনাথ যাত্রায় যোগদান করেন। তীর্থ যাত্রার প্রধান উদ্দেশ্যই এই শিব লিঙ্গে পূজা দেয়া।
★অমরনাথে কবে থেকে তীর্থ যাত্রা শুরু হয় তা জানা যায় না। একটি তথ্যসুত্র থেকে ধারণা করা হয় কিংবদন্তী রাজা আরজরাজা (খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ সাল) বরফ নির্মিত শিবলিঙ্গে পূজা দিতেন। ধারণা করা হয় রাণী সূর্যমতি ১১ শতকে অমরনাথের এই ত্রিশুল,বানলিঙ্গ ও অন্যান্য পবিত্র জিনিস উপহার দেন। এছাড়াও পুরাতন বিভিন্ন বই থেকে আরও বেশ কিছু ভিন্ন ভিন্ন এসম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়।
★পুরাণ অনুসারে, শিব পার্বতীকে অমরত্ব প্রদানের উদ্দেশ্যেই অমরনাথ গুহাকে বেছে নিয়েছিলেন। পহলগাঁও থেকে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। এই পহেলগাঁওতেই শিব তাঁর ষাঁড় নন্দীকে রেখে গিয়েছিলেন। চন্দনওয়াড়িতে তিনি তাঁর শিরস্থ চন্দ্রকে রেখে যান এবং শেষনাগে তিনি তাঁর দেহে বিচরণরত সর্পকুলকে রাখেন। গণেশকে রাখেন মহাগণেশ পর্বতে। তার পরে বায়ু, অগ্নি, জল, মৃত্তিকাকে রাখেন পঞ্জতরণী নামে একটি জায়গায়। প্রায় সব ত্যাগ করেই তিনি পার্বতীকে নিয়ে অমরনাথের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
★বলা হয়, যখন শিব পার্বতীকে অমরত্ব সম্পর্কে জ্ঞানদান করছিলেন।
★তখন সেখানে কোনও জীবিত প্রাণী ছিল না। কেবল একটি পায়রার ডিম সেখানে থেকে গিয়েছিল। কথিত আছে এই ডিম থেকে একজোড়া পায়রা জন্মায় এবং তারা অবধারিতভাবে অমরত্ব লাভ করে। এদের নাকি আজও গুহার ভিতরে দেখা যায়।
★অমরনাথ গুহাটি আবিষ্কার করেন বুটা মালিক নামে এক মুসলমান মেষপালক। তিনি এখানে এক সন্ন্যাসীর দেখা পান। সন্ন্যাসী তাঁকে একটা থলিতে কিছু কয়লা দান করেন। পরে সেই কয়লা সোনায় পরিণত হয়। বুটা সেই স্থানে ফিরে যান। কিন্তু সেই সন্ন্যাসীকে আর দেখতে পাননি। বদলে তিনি অমরনাথ লিঙ্গ দেখাতে পান।
★অমরনাথ তুষারলিঙ্গের বৃদ্ধি চন্দ্রকলার উপরে নির্ভরশীল। শিবলিঙ্গ ছাড়াও আরও দু’টি লিঙ্গ এই গুহায় রয়েছে। এদের পার্বতী ও গণেশ মনে করা হয়।
★এই গুহার বয়স আনুমানিক ৫০০০ বছর।
★দু’টি পথে অমরনাথ যাত্রা সম্পন্ন হয়— পহলগাম রুট এবং এবং বালতাল রুট।
★প্রতি বছর অগণিত মানুষ অমরনাথ যাত্রা করেন। শ্রাবণে এই যাত্রা শুরু হয়।
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে।
নিবেদয়ামি চাত্মানং গতিস্তং পরমেশ্বরম্।।
(বাণেশ্বর শিবের ক্ষেত্রে)-
ওঁ বাণেশ্বরং নরকার্ণবতারণায়
জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায়।
কর্পূরকুন্দধবলেন্দুজটাধরায়
দারিদ্র্যদুঃখদহনায় নমঃ শিবায়।।
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়
ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায় ওঁ নমঃ শিবায়